How to Make your Ihram

ইহরাম (Ihram) আরবি শব্দ , যার অর্থ নিষিদ্ধ বা হারাম । অর্থাৎ কোনো জিনিষকে নিজের ওপর নিষিদ্ধ বা হারাম করে নেওয়া । নামাজে যেমন নিয়ত করতে হয়, তেমনি হজ বা উমরাহ করার জন্য ইহরাম বাঁধতে হয়, এই ইহরাম ই হলো হজ বা ওমরার নিয়ত । ইহরাম অবস্থায় দুনিয়াবী অনেক হালাল কাজ নিষিদ্ধ হয়ে যায় ।
ইহরামের ওয়াজিব তিনটি
- সেলাই বিহীন কাপড় পরা ( পুরুষ ) ।
- মীকাত থেকে ইহরাম বাধা ।
- ইহরাম বাধার পরে অর্থাৎ নিয়ত করার পরে তালবিয়া পাঠ করা ওয়াজিব।
মীক্বাত কি ?
হজ বা উমরাহ এর উদ্দেশ্যে যে নির্ধারিত স্থান থেকে ইহরাম বাঁধতে হয় , ওই স্থানকে মীক্বাত বলে ।
হজ বা উমরাহ এর স্থানগত মীকাত ৫ টি
১. জুলহুলাইফাহ
২. আল জুহফা
৩.কারনুল মানাযিল
৪. ইয়ালামলাম
৫. জাতুইরক
বাংলাদেশ এর হজ / উমরাহ যাত্রীগণ “ইয়ালামলাম ” থেকে ইহরাম বাধবে / নিয়ত করবে , বাসা বা ঢাকা এয়ারপোর্ট থেকে ইহরাম এর কাপড় পরিধান করবে কিন্তু ইহরাম বাধবে মীকাত থেকে । বিমান এর ভিতরে মীকাত পয়সানোর ৩০মিন পূর্বে ইহরাম বাধার ঘোষণা দেওয়া হয় । তখন সবাই ইহরাম বাধবে অর্থাৎ নিয়ত করবে । ইহরাম না বেঁধে মীকাত অতিক্রম করা যাবে না । ইহরাম এর কাপড় পরা, ইহরাম বাধা এক নয়।
বাংলাদেশের হজ-উমরাহ যাত্রীগণ তাদের বাসা বা ঢাকা এয়ারপোর্ট থেকে ও ইহরাম বাঁধতে পারে ,
তবে মীকাত থেকে বা পূর্বক্ষণে ইহরাম বাধা উচিৎ । কারণ নবীজি রাসূলুল্লাহ সাল্লেল্লাহু ওয়ালিহিসালাম মীকাতে পৌঁছে ইহরাম করতেন । তাই মীকাত এ না পৌঁছে ইহরাম করবে না এবং তালবিয়া ও পাঠ করবে না ।
ইহরাম এর ধাপ সমূহ
- ইহরাম এর প্রস্তুতি
- কাপড় পরা
- নিয়ত করা
- তালবিয়া পাঠ করা
- ইহরাম অবস্থায় নিষিদ্ধ কাজ সমূহ থেকে দূরে থাকা।
- ইহরাম এর প্রস্তুতি
- হাত এবং পায়ের নখ কাটা ।
- শরীরের অবাঞ্চিত লোম / চুল পরিষ্কার করা ।
- গোসল বা ওযু করে পবিত্রতা অর্জন করা ।
- ইহরাম করার পূর্বে গোসল করাই উত্তম , যদি পর্যাপ্ত পানি না থেকে বা অন্য কোনো বাস্তব অসুবিধা থাকে তবে ওযু করে ইহরাম এর পূর্ব প্রস্তুতি সম্পন্ন করবে।
- ইহরাম এর কাপড় পরা
পুরুষদের জন্য সেলাইবিহীন ২ টুকরা সাদা কাপড় , একটি নীচে পরবে। দ্বিতীয়টি গায়ে দিবে। ৩য় আর কোন প্রকার কাপড় গায়ে রাখা যাবে না। যেমন টুপি, গেঞ্জি, জাইঙ্গা বা তাবীজ কিছুই না। তবে শীত নিবারণের জন্য চাদর ও কম্বল ব্যবহার করতে পারবে। তবে মাথা ঢাকা যাবেনা । পায়ে ২ফিতার সেন্ডেল পরবে। - ইহরাম এর নিয়ত করা
মীকাত থেকে নিমলিখিত কয়েক ধরণের মধ্যে থেকে যেকোনো একধরণের নিয়ত করতে হবে
উমরাহ যাত্রীগণ উমরাহ এর জন্য ইহরাম বাধবে অর্থাৎ নিয়ত করবে ।
লাব্বাইক উমরাতান (অর্থ: আমি আপনার ডাকে সাড়া দিতে ওমরার জন্য হাযির)
বিস্তারিত উমরাহ গাইড ( পুরুষ / মহিলা ) দেখতে এখানে ক্লিক করুন
- তালবিয়া পাঠ করা
উচ্চস্বরে ( পুরুষ ), নিন্মস্বরে ( মহিলা ) তালবিয়া পাঠ করবে , তালবিয়া নিজে নিজে পাঠ করতে থাকবে দলবেঁধে তালবিয়া পাঠ করা সুন্নত সম্মত নয়।
ইহরাম বাধা অর্থাৎ নিয়ত করার পরথেকেই তালবিয়া পাঠ শুরু করবে , শেষ করবে তাওয়াফ শুরু করার পূর্বক্ষণে। হজ এর তালবিয়া ১০ই জিলহজ বোরো জামারায় পাথর নিক্ষেপের পূর্ব পর্যন্ত তালবিয়া পাঠ করতে থাকবে।
মেয়েদের ইহরাম
মেয়েদের ইহরাম এর জন্য বিশেষ কোনো ড্রেস নেই , সম্পূর্ণ শরীর ঢিলাঢালা ভাবে আবৃত করে এমন যেকোনো রং এর সাধারণ শালীন পোশাক পরবে , তবে মুখমন্ডল এবং হাতের কব্জি খোলা থাকবে | নিকাব ও হাতমোজা পরবেনা | মাহরাম ব্যতীত অন্য পুরুষ থেকে পর্দা করার জন্য ওড়না জাতীয় কিছু ব্যবহার করবে | মহিলাগণ পায়ে মোজা পরতে পারবে .
হায়েয–নেফাস অবস্থায় মেয়েরা পরিচ্ছন্ন হবে, গোসল করবে, ইহরাম বাধবে। কিন্তু হায়েয-নেফাস অবস্থায় নামায পড়বে না এবং কাবাঘর তাওয়াফ করবে না। বাকী অন্যসব কাজ করবে। এরপর যখন পবিত্র হবে তখন অজু-গোসল করে তাওয়াফ ও সাঈ করবে। যদি ইহরামের পর হায়েয শুরু হয় তখনো কাবা তাওয়াফ করবে না যতক্ষণ পবিত্র না হয়।
ইহরাম অবস্থায় নিষিদ্ধ কাজ সমূহ
- চুল, নখ কাটা , শরীর চুলকানোর সময় অজ্ঞাতসারে চুল / পশম পরে গেলে ক্ষতি নেই , তবে সাবধান থাকা ভালো।
- কাপড়ে বা শরীরে সুগন্ধি ব্যবহার করা ।
- ইহরামের কাপড় ( পুরুষ ) মাথায় লেগে থাকে এমন কিছু পড়া , যেমন টুপি, পাগড়ি , ইত্যাদি ।
- ইহরাম অবস্থায় ( পুরুষ ) পুরু শরীরে বা আংশিক ভাবে সেলাই করা কাপড় পরিধান করা ।
- স্বামী-স্ত্রী শারীরিক সম্পর্কে জড়ানো বা এ সংক্রান্ত কিছু করা ।
- বিয়ের প্রস্তাব দেয়া ( মুহরিম অবস্থায় বিয়ে করা যাবে না ). ।
- ইহরাম অবস্থায় মহিলারা হাতমোজা পরবেনা, নেকাব দিয়া চেহারা ঢাকবে না ।
- মাহরাম ব্যতীত অন্য পুরুষ থেকে পর্দা করার জন্য ওড়না জাতীয় কিছু ব্যবহার করবে ।
- কোনো প্রাণী শিকারের উদ্দেশে ধাওয়া করা / শিকার করা ।
- ইহরাম অবস্থায় অথবা অন্য সময় , হারাম এরিয়াতে গাছের পাতা / ডাল ভাঙা ।
- কটুকথা বলা , ঝগড়াঝাটি করা , কাওকে কষ্ট দেওয়া।
ইহরাম অবস্থায় যা করা বৈধ
- শুধু পানি বা সুগন্ধ বিহীন সাবান দিয়ে মাথা ও শরীর ধোয়া যাবে ।
- ক্ষত স্থানে বেন্ডেজ লাগানো যাবে ।
- চশমা , ঘড়ি , বেল্ট, সেফটিপিন , ইয়ারফোন ব্যবহার করা যাবে ।
- সেন্ডেল, আংটি পড়া যাবে।
- মাথায় ছাতা ব্যবহার করা যাবে ।
- ইহরামের পোশাক পরিবর্তন এবং পরিষ্কার করা যাবে ।
- স্বপ্নদোষ হলে ইহরামের কোন ক্ষতি হয় না।
- মহিলাগণ সেলাইযুক্ত কাপড় এমনকি অলংকারও পরতে পারবে।
মানুষের জন্য ক্ষতিকর বিষাক্ত প্রাণী মারা যাবে